মানব সম্পদ উন্নয়নে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সাফল্য গাঁথা
শহর সমাজ উন্নয়ন কার্যক্রম শহর এলাকার নিম্ন আয়ভুক্ত জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন এবং যত্নশীল সমাজ প্রতিষ্ঠা ও সরকারের রূপকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগের সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে শহর এলাকার পিছিয়েপড়া ও সমস্যাগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর সামাজিক ক্ষমতায়ন ও জীবনমান উন্নয়নের অভিলক্ষ্যে লক্ষ্যভুক্ত জনগোষ্ঠীকে সংগঠিত করে তাদের দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রদান করে চলেছে। দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত ২০টি ট্রেড এ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়ে থাকে। এসব ট্রেড এ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে অনেকেই সফল হয়েছেন। এমন কিছু সফল প্রশিক্ষণার্থীদের সাফল্য চিত্র নিচে দেয়া হল।
স্বপ্ন হলো সত্যি ....
মোঃ মুরাদ হোসেন
গ্রাফিক্স ডিজাইনার এবং পরিচালক ভেনাস আইটি ইন্সটিটিউট (কুষ্টিয়া)
মোঃ মুরাদ হোসেন, নিজ জেলা কুষ্টিয়া। অনলাইনে কাজ করে উপার্জন করার আগ্রহটা তার অনেক আগে থেকেই। অনলাইন থেকে প্রতিদিন ইনকাম করুন ৫ ডলার প্রতিদিন ১০০০ টাকা ইনকাম করুন, এই রকম আর্টিকেল ফেসবুক ইউটিউবে অনেক দেখতেন। এজন্য প্রতিনিয়ত অনলাইন থেকে বিভিন্ন রকম আর্টিকেল পড়তেন। একদিন দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, শহর সমাজসেবা কার্যালয়, কুষ্টিয়া এর ফেসবুক পেইজে একটি পোস্ট দেখতে পায় ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কিত। ফেসবুকের ওই পোস্টটি দেখে কোর্সটি করার আগ্রহ জন্মে তার এবং অফিসে গিয়ে ভর্তির জন্য যোগাযোগ করেন। এরপর গ্রাফিক্স ডিজাইন কোর্সটিতে ভর্তি হন। নিয়মিত ক্লাস করতে থাকেন। এভাবে 25 তম ক্লাসেই তার প্রথম 10 ডলারের কাজ আসে। এভাবে ক্লাস চলাকালীন অবস্থায় 110 ডলার উপার্জন করেন। এটিই ছিল মূলত টার্নিং পয়েন্ট।
কোর্স শেষ করার এক মাস পর দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, শহর সমাজসেবা কার্যালয়, কুষ্টিয়ার ক্লাস মেন্টর স্যারের মাধ্যমে একটি চাকরির অফার পান মোঃ মুরাদ হোসেন। চাকরিটা ছিল প্রযুক্তির সহায়তায় নারীর ক্ষমতায়ন প্রকল্পে। ট্রেইনার হিসেবে সেখানে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। তার ভাষায় ‘ছাত্র থাকাকালীন অনলাইনে উপার্জন এবং চাকরি পাওয়াটা আমার কাছে ছিল অনেক আনন্দের।’
তিনি নারীর ক্ষমতায়ন প্রকল্পে উদ্যোক্তা সম্পর্কিত প্রশিক্ষক ছিলেন। এজন্য নিজেরও উদ্যোক্তা হওয়ার আগ্রহ জন্মে। এরপর কুষ্টিয়াতে ভেনাস আইটি ইনস্টিটিউট নামে একটি প্রতিষ্ঠান এর কার্যক্রম শুরু করেন। যারা অনলাইনে কাজ করে উপার্জন করে মুরাদসহ দুই জনকে নিয়ে এই প্রতিষ্ঠানের কাজ শুরু করেন। এ যেন স্বপ্নকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে নতুনরূপে রূপদানের এক মহাযজ্ঞ। শুরুতে ১৮ জন ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে গ্রাফিক্স ডিজাইনের কোর্সটি আরম্ভ করেন। বর্তমানে গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন, এসইও এবং ডিজিটাল মার্কেটিং এই কোর্সগুলো মিলে তাদের সর্বমোট ছাত্র-ছাত্রী ৬৫ জন। বর্তমানে মুরাদের মাসিক আয় ৩০- ৪০ হাজার টাকা। তার এ সফলতার জন্য তিনি দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, শহর সমাজসেবা কার্যালয়, কুষ্টিয়ার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে এখন সফল প্রশিক্ষক....
মো: রাসেল রানা, পিতা: মো: ছহির উদ্দিন, মাতা- মোছা: শামসুন্নাহার, গ্রাম: টনকীবাজার, উপজেলা: মেলান্দহ, জেলা: জামালপুর। সে একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। তার পিতা একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, মাতা স্থানীয় বেসরকারী কলেজের চতুর্থ শ্রেণির একজন কর্মচারী। দারিদ্র্যপীড়িত পরিবারে তার জন্ম। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনা এবং নতুন কিছু শেখার প্রতি তার অদম্য আগ্রহ ছিল। তাই তার বাবা মা তাকে উচ্চ শিক্ষার জন্য জামালপুর সরকারি আশেক মাহমুদ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ভর্তি করান। সে যখন অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র তখন দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, শহর সমাজসেবা কার্যালয়, জামালপুর এ কম্পিউটার এপ্লিকেশন প্রশিক্ষণ কোর্সে ভর্তি হন। তিনি জানুয়ারি/২০14 থেকে জুন/২০14 কোর্সের পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেন। তিনি জামালপুর জেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠ সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের আইসিটি ক্লাব প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অদ্যাবধি দায়িত্ব পালন করে আসছেন। কম্পিউটার এপ্লিকেশন প্রশিক্ষণ কোর্সে তার দক্ষতা ও সফলতার কারণে তিনি 01 এপ্রিল 2016খ্রি. অত্র প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রশিক্ষক হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। তার হাতেই 05টি সেশনে মোট 1925 জন প্রশিক্ষণার্থী কম্পিউটার এপ্লিকেশন প্রশিক্ষণ কোর্স সম্পন্ন করেন ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষায় সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হন। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন এখন সরকারি চাকরিতে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছে। তিনি দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, শহর সমাজসেবা কার্যালয়, জামালপুর হতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে ঐ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সফল প্রশিক্ষক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন।
শহর সমাজসেবা কার্যালয়ের আওতাধীন ৮০ টি দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত তথ্যাবলী
দেশের ৬৪ জেলায় শহর সমাজসেবা কার্যালয় পরিচালিত ৮০টি দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র জুলাই/২০১৬ সাল হতে এক একটি ইন্সটিটিউট হিসেবে দেশের অদক্ষ জনগোষ্ঠীকে দক্ষ মানব সম্পদে রূপান্তরিত করে SDG লক্ষমাত্রা অর্জন এবং দেশে-বিদেশে দক্ষ জনশক্তির চাহিদা অনুসারে দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টির মাধ্যমে সরকার ঘোষিত ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত দেশের পর্যায়ে উন্নীতকরণের লক্ষ্যে, দেশের তরুণ সম্প্রদায়কে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত ২০ টি ট্রেডে ৩৬০ ঘন্টা ৩ (তিন) মাস, ৬ (ছয়) মাসের বেসিক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। প্রতিটি ট্রেডের প্রশিক্ষণার্থীর জন্য এসি ও ওয়াইফাই জোন সম্বলিত আধুনিক ল্যাব গঠন করা হয়েছে।
২০১৬-১৭ অর্থ বছরে প্রশিক্ষণার্থীর তথ্য |
২০১৫-১৬ অর্থ বছর পর্যন্ত মোট ১,৯৪,৭৩৩ জন |
||||||||||||
সেশন |
ভর্তিকৃত প্রশিক্ষণার্থীর সংখ্যা |
উত্তীর্ণ প্রশিক্ষণার্থীর সংখ্যা |
উর্ত্তীর্ণের হার |
২০১৬-১৭ অর্থ বছরে মোট প্রশিক্ষাণার্থীর সংখ্যা |
|||||||||
নারী |
পুরুষ |
মোট |
নারী |
পুরুষ |
মোট |
||||||||
জুলাই-ডিসেম্বর/২০১৬ |
৪৪৪২ |
৬৬৬৩ |
১১১০৫ |
৩৯৭৮ |
৫৯৬৫ |
৯৯৪৩ |
৮৯.৮৭% |
২০,৪৬৩জন |
২০১৬-১৭ অর্থ বছর পর্যন্ত মোট ২,১৫,১৯৬ জন |
||||
জানুয়ারী-জুন/২০১৭ |
৩৭৪৪ |
৫৬১৬ |
৯৩৫৮ |
৩৫১০ |
৫২৬৪ |
8774 |
৯৩.৭৫% |
||||||
মোট= |
২০৪৬৩ |
|
১৮৭১৭ |
|
|||||||||
২০১৭-১৮ অর্থ বছরে প্রশিক্ষণার্থীর তথ্য |
|
||||||||||||
সেশন |
ভর্তিকৃত প্রশিক্ষণার্থীর সংখ্যা |
উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা |
উর্ত্তীর্ণের হার |
2017-18 অর্থ বছরে মোট প্রশিক্ষাণার্থীর সংখ্যা |
২০১৭-১৮ অর্থ বছর পর্যন্ত মোট ২,৩৮,৫০৫জন |
||||||||
নারী |
পুরুষ |
মোট |
নারী |
পুরুষ
|
মোট |
||||||||
জুলাই-ডিসেম্বর/২০১৭ |
4240 |
6360 |
10600 |
৩২৪৪ |
৪৮৬৬ |
৮১১০ |
৯৩.৭৫% |
২৩৩০৯ জন |
|||||
জানুয়ারী-জুন/২০১৮ |
5083 |
7626 |
12709 |
৩৯৪৯ |
৫৯০৮ |
৯৮৪৭ |
৯১.৫৭% |
||||||
মোট |
২৩৩০৯ |
মোট |
১৭৯৫৭ |
|
|
||||||||
২০১৮-১৯ অর্থ বছরে প্রশিক্ষণার্থীর তথ্য |
২০১৮-১৯ অর্থ বছর পর্যন্ত ২,৬২,১০৫ জন
|
||||||||||||
সেশন |
ভর্তিকৃত প্রশিক্ষণার্থীর সংখ্যা |
উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা |
উর্ত্তীর্ণের হার |
২০১৮-১৯ অর্থ বছরে মোট প্রশিক্ষাণার্থীর সংখ্যা |
|||||||||
নারী |
পুরুষ |
মোট |
নারী |
পুরুষ |
মোট |
|
|||||||
জুলাই-ডিসেম্বর/ ২০১৮ |
৫০৫৪ |
৭১১৩ |
১২১৬৭ |
৪৫৪০ |
৬৮০৯ |
১১৩৪৯ |
৯৬.৫৮% |
২৩৬০০ জন |
|||||
জানুয়ারি-জুন/২০১৯ |
৪৫৭৩ |
৬৮৬০ |
১১৪৩৩ |
৪৩৮৬ |
৬৫৮০ |
১০৯৬৬ |
৮৪.১৬% |
||||||
মোট = |
২৩৬০০ |
মোট= |
২২৩২৫ |
|
|
||||||||
জুলাই-ডিসেম্বর/ ২০১৯ |
৬৭২০ |
৪৪৮০ |
১১২০০ |
|
|
|
|
চলমান |
2012-13 |
2013-14 |
2014-15 |
2015-16 |
2016-17 |
2017-18 |
201৮-1৯ |
1 |
2 |
3 |
4 |
5 |
6 |
7 |
13053 |
14601 |
14855 |
15654 |
20463 |
23309 |
23600 |
সেশন |
পরীক্ষার্থীর সংখ্যা |
উর্ত্তীণের সংখ্যা |
উর্ত্তীণের হার |
মন্তব্য |
জুলাই-ডিসেম্বর/2016 |
11105 |
9943 |
89.87% |
|
জানুয়ারী-জুন/2017 |
৯৩৫৮ |
৮৭৭৪ |
93.75% |
|
জুলাই-ডিসেম্বর/২০১৭ |
8439 |
8110 |
৯৩.00% |
|
জানুয়ারী-জুন/২০১৮ |
9847 |
9017 |
৯1.৫7% |
|
জুলাই-ডিসেম্বর/২০১৮ |
১১৭৫০ |
১১৩৪৯ |
৯৬.৫৮% |
|
জানুয়ারি-জুন/২০১৯ |
১০৯৬৬ |
৮৮৯১ |
৮৪.১৬% |
|